বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার পর পালিয়েছেন এক ইমাম। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছেন ওই ছাত্রীর মা ও এক বোন। তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (৮ মে) রাতে এ ঘটনা ঘটে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায়। পুলিশ ঘটনাস্থলের কাছ থেকে রক্তমাখা ছুরিটি উদ্ধার করেছে।

নিহত রাবেয়া আক্তার (২১) ওই এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। আহতরা হলেন মা বিলকিস বেগম (৪৬) ও রাবেয়ার ছোট বোন খাদিজা আক্তার (১৫)। রাবেয়া ২০২০ সালে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ডাক্তারি পড়তে ইউরোপের দেশ ইতালি যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

ঘাতক হাফেজ সাইদুল ইসলাম (২৫) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার মহেশতারা গ্রামের মৃত জব্বার মোল্লার ছেলে এবং সালনার টেকিবাড়ী এলাকার টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম।

নিহত রাবেয়ার বাবা আবদুর রউফ জানান, তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে রাবেয়া জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ডাক্তারি পড়তে ইতালি যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে ছোট দুই মেয়েকে বাসায় এসে আরবি পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় ইমাম সাইদুল ইসলামকে। পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসা করায় বড় মেয়ে রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ইমাম সাইদুল। এতে তাঁকে বাসায় এসে পড়াতে নিষেধ করেন রাবেয়ার বাবা। এতে সাইদুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়ার কলেজে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকিও দেন।

সোমবার সন্ধ্যায় রাবেয়ার চিত্কারে তাঁর মা, ছোট বোন হাবিবা ও খাদিজা দৌড়ে গিয়ে দেখতে পান সাইদুল ধারালো লম্বা ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথা, গলা ও হাত-পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করছেন। তাঁরা রাবেয়াকে রক্ষা করতে গেলে বিলকিস বেগম ও খাদিজাকেও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যান সাইদুল। রাবেয়াকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ঘাতককে গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *