নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে ৬ প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ ফেব্রæয়ারী ঢাকায় নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেলের সাথে দেখা করতে যায় চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি।

৬ ফেব্রæয়ারী দিবাগত রাতে সাংসদ আদেলুর রহমানের সাথে দেখা করে রাতে বাড়ী ফেরার জন্য ঢাকা নাবিল পরিবহনের টিকিট কাটানোর জন্য কাউন্টারের সামনে গিয়ে পৌছিলে সেখানে হাফিজার রহমান ষ্ট্রক করে মাটিতে পড়ে যায়। সাথে সাথে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ৭ ফেব্রæয়ারী দুপুরে তার পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

৮ ফেব্রæয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই- আলম সিদ্দিকী চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষনা করেন। পরে নির্বাচন কমিশন ৯ এপ্রিল ওই শূন্য আসনে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষনা করেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়,এ উপ-নিবাচনে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ ও জমাদানের শেষ তারিখ ২৭ এপ্রিল,মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ এপ্রিল,প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ ৮ মে ও ভোট গ্রহন ২৫ মে ঘোষনা করেন।

এ উপ-নির্বাচনে গত নির্বাচনের তুলনায় প্রার্থীদের আগ্রহ কমে এসেছে। গত নির্বাচনে মোট ৮জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে অংশ নেন। কিন্তু এ উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের শেষ দিন পর্যন্ত ৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেন।

৬ প্রার্থীর মধ্যে চাঁদখানা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য কৃষিবিদ মোস্তাফিজার রহমান যাদু,জাতীয় পার্টির চাঁদখানা ইউনিয়ন সভাপতি সমাজসেবক শফিকুল ইসলাম শফি,আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলম সবুজ,বিদ্রোহী প্রার্থী খাইরুল আলম, চাঁদখানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল বারেক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু কালাম আজাদ।

চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচনকে ঘিরে চাঁদখানা ইউনিয়নে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ঈদের আনন্দের আমেজ কাটতে না কাটতেই নির্বাচনী আমেজে সময় কাটছে চাঁদখানার সাধারণ মানুষের মাঝে। এক বছর পর নির্বাচন হওয়াতে প্রার্থীদের যেমন নাভিশ্বাস হয়ে দাঁড়িয়েছে অপরদিকে ভোটাররা আছে ফুরফুরা মেজাজে। এবারের ভোটে পুরাতন প্রার্থীদের পাশাপাশি আওয়ামীলীগের নতুন প্রার্থী হিসাবে কৃষিবিদ মোস্তাফিজার রহমান যাদু জায়গা দখল করে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার জন্য নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছে। গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সামান্য ভোট পেয়ে পরাজিত প্রার্থীর এ আসনকে পূনরুজ্জীবিত করে দলকে শক্তিশালী করতে বদ্ধ পরিকর যাদু মিয়া।

দলীয় প্রতীক না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন গত নির্বাচনে ১৪ ভোটে হেরে যাওয়া প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলম সবুজ। তিনি কোন ভাবেই আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে ছাড় দিবেন না। ভোট যুদ্ধে ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে প্রমাণ করতে প্রস্তত সাবেক এ চেয়ারম্যান।

অপর দিকে দলীয় প্রতীক না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগের চাঁদখানা ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুল বারেক মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনিও ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোটের পাশাপাশি দোয়া নিয়ে গণসংযোগ করেই চলছেন।

গত নির্বাচনে অল্প ভোটে হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগের আর বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক প্রয়াত আইয়ুব আলীর ছেলে খাইরুল আলম,নির্বাচনে হেরে গিয়েও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিয়ে, বৌ ভাত,খাৎনা,অন্নপ্রাসন্ন অনুষ্ঠানের কারো দাওয়াতে অংশ নিয়ে ভোটারদের মন কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ তরুন প্রার্থী। তার বাবার হারানো এ আসনকে ফিরে পাওয়ার জন্য মড়িয়া হয়ে কাজ করছে।

তবে ভোট নয়,গরীব মানুষের আপন বন্ধু,বিপদের কান্ডারী হয়ে সর্বদা কাজ করেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শফি। গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর এক সপ্তাহের মাথায় থেকে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টির এ নেতা। ক্ষমতা নয়,জনগণের সেবক হিসাবে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি। নির্বাচনে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির দূর্গকে আরো বেশী মজবুত করতে মাঠে কাজ করছেন তিনি।

তবে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবু কালাম আজাদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর থেকে তার নাম শোনা যাচ্ছে। তার দাবী আমি নির্বাচন করে চাঁদখানার মানুষের পাশে থাকতে চাই।

প্রতিবারের ন্যায় এ নির্বাচন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম হওয়াতে ভোটারদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। ইভিএমে ভোট প্রদানে অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেক ভোটার তাদের ভোট প্রদান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন,প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে মগ ভোটিংয়ের মাধ্যমে ভোটারদের ভোট প্রদান করা শেখানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *