নীলফামারীর গরু খোঁয়াড়ে দিতে তারাগঞ্জে
গবাদিপশু ফসলের ক্ষতি করলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ওই পশুকে খোঁয়াড়ে দেন। যতদিন পশুর মালিক ফসলের ক্ষতিপূরণ না দিবে ততদিন পশুটিকে খোঁয়াড়ে আটকে রাখা হয়। কালের বিবর্তনে গরু-ছাগলের খোঁয়াড় দেওয়ার রেওয়াজ আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু মনের ক্ষোভে ২৫০০ টাকায় পিকআপ গাড়ি ভাড়া করে সুদূর নীলফামারী জেলার সদর থানার টুপামারী ইউনিয়ন থেকে রংপুর জেলার তারাগঞ্জে গরু খোঁয়াড়ে দিতে এসেছেন মোঃ আলাউদ্দিন ।
রবিবার দিবাগত ১২ টায় মোবাইল ২ গাড়ি নিয়ে ডিউটি করছিল তারাগঞ্জ থানার এএসআই কে এম সাইফুল ইসলাম । হঠাৎ ওয়ারলেস সেটে খবর আসে গরু খোঁয়াড় দিতে কয়েকজন একটি পিকআপ গাড়ি নিয়ে সয়ার ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জের খোঁয়াড় ইজারাদার মোহাব্বতের বাড়িতে এসেছে । এত রাতে ও এতদূর থেকে গরু নিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ হলে তারাগঞ্জ থানায় মুঠোফোনে জানান ইজারাদারের পরিবারের লোকজন ।
খোঁয়াড় ইজারাদার মোহাব্বত জানান , বাসা থেকে ফোন আসে আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি পিকআপ যোগে গরু নিয়ে এসেছে খোঁয়াড়ে জমা দিতে। এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্য ও আমার কাছে বিষয়টি খটকা লাগায় প্রশাসনকে জানিয়েছি । কারণ ইদানিং বিভিন্ন জায়গায় গরু চুরি হচ্ছে , এতে ব্যাবহার করা হয় এ ধরেন পিকআপ গাড়ি । পরে এএসআই সাইফুল এসে তাদের বিষয়ে তদন্ত করেন , গরুর খোঁয়াড় দিতে আসার ঘটনার ।
গরু খোঁয়াড় দিতে আসা আলাউদ্দিন জানান, নীলফামারী পুলিশ লাইনের পাশে আমার ৪ শতক জমির ফসল খেয়ে সাবার করেছে একই এলাকার নজরুলের গরু । আমি গরুর মালিককে জানালে কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে । পরে আমি গরু খোঁয়াড়ে দিতে চাইলে আমাকে গরু চুরির মামলার ফাঁসানোর হুমকি দেয়। আমি উপায়ন্তর না পেয়ে একটি পিকআপ গাড়ি ভাড়া করে তারাগঞ্জ নিয়ে এসে খোঁয়াড় দেই ।
গরুর মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, আমার গরু অল্প একটু ফসল খেয়েছে। কিন্তু তার জন্য যে এত দূরে এসে খোঁয়াড় দেবে কল্পনা করতে পারিনি । যাই হোক গরু পেয়েছি তাতেই আমি খুশি।
সয়ার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মিতিউর রহমান মিতু বলেন, লোকজন জড়ো হলে আমি দ্রুত গিয়ে দেখি গরু খোঁয়াড় দিতে এসেছে । পরে থানায় যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের সুরাহা করেছে ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এএসআই কে এম সাইফুল ইসলাম জানান, তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমানের নির্দেশে আমি গরুর প্রকৃত মালিকের খোঁজ বের করি ও খোঁয়াড় দিতে আসা ব্যাক্তির সাথে কথা বলে সমন্বয় করিয়ে দেই ।