পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা পরবর্তীতে শান্তি চুক্তি নামে পরিচিত। তিনি বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদনের পর পার্বত্যবাসীর কল্যাণের জন্য ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। সে থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় শান্তি চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখে চলেছে। তিনি বলেন, ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৬৫টি ধারার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি ৭টি ধারার কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়িত ধারাগুলো সকলের অনুসরণ ও পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন পার্বত্য সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসি।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং) বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ধারা ৩৪(ক), (খ), (ঙ) এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ১৯৯৮ অনুযায়ী (১) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন, (২) পুলিশ (স্থানীয়) (৩) ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং (৪) পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন/বন বিভাগ পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহে হস্তান্তরের লক্ষ্যে অনুষ্ঠেয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি এসব কথা বলেন।

পার্বত্য সচিব মশিউর রহমান এনডিসি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী সরকারি বিভিন্ন বিষয় বা বিভাগ পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তরের উল্লেখ আছে। তিনি বলেন, সে অনুযায়ী সরকারের ৩০টি বিভাগ বা সংস্থার কাজ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তানর করা হয়েছে। যার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এ যাবত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন যথাক্রমে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩০টি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে ২৯টি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে ২৮টি বিষয় বা বিভাগ হস্তান্তরিত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পার্বত্য তিন জেলা পরিষদের কাছে যোগাযোগ, ভূমি, পুলিশ (স্থানীয়) এবং পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন বা বন বিভাগ আজ অবধি পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতায় হস্তান্তর করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি এ বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

 

সভায় বিভিন্ন সংস্থা হতে আগত প্রতিনিধিগণ এ সংক্রান্ত বিষয় নিষ্পতির জন্য আরও কয়েকটি সভা আহ্বানের অনুরোধ জানান। সচিব মশিউর রহমান বলেন, সরকার পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। তিনি প্রতিনিধিদের সরকারের পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সকলকে আন্তরিক পরবর্তী সভায় উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সভার কাজ শেষ করেন।

এসময় অন্যান্যের মাঝে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, যুগ্মসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এনডিসি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি সদস্য কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মুনিরা সুলতানা, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড় বিভাগের যুগ্মসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সজল কান্তি বনিক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এস এম আরিফ পাশা ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *