বন্দরে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার প্রধান আসামী আক্তার হোসেন মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে র্যাব-১১ কর্তৃক গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন চাঞ্চল্যকর আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার প্রধান আসামী আক্তার হোসেন (৪৮)’কে মামলা রুজু হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বন্দর থানাধীন হরিবাড়ী (মুছাপুর) এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত হচ্ছে একই এলাকার মৃত আজগর আলীর ছেলে।
একই দিন রাত ৮ টায় র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্প এর কোম্পানী কমান্ডার, উপ-পরিচালক, মেজর অনাবিল ইমাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানান, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধের অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নিবিড় গোয়েন্দা নজরদারী ও পরিকল্পিত আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধী গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় এনে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, সিপিসি-১ নারায়ণগঞ্জ এর একটি আভিযানিক দল ২১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন হরিবাড়ী (মুছাপুর) এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উপরোক্ত চাঞ্চল্যকর আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও এজাহার পর্যালোচনায় জানা যায় যে, নিহত ভিকটিম সিরাজুল ইসলাম (৬৫) বিবাদী আক্তার হোসেন (৪৮) এর অটো রিক্সার গ্যারেজে নাইট গার্ডের চাকুরি করত। গত ২০/১০/২০২৪ ইং তারিখ বিবাদী আক্তার হোসেনের অটো রিক্সার গ্যারেজ থেকে ৬ টি অটো রিক্সা চুরি হয়। তখন নিহত ভিকটিম অটো রিক্সা গ্যারেজে ডিউটিরত ছিলো। বিবাদী আক্তার হোসেন ভিকটিমকে অটো রিক্সা চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে মুছাপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমের বাড়িতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে দরবার শালিসী বসান। শালিসের এক পর্যায়ে ভিকটিমকে চুরির অপবাদে সকলের সামনে খারাপ আচরণ, অপমান অপদস্তসহ অপমানজনক ও প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলে মানষিকভাবে নির্যাতন করে। উক্ত শালিসীতে সমস্যার কোন সমাধান না হওয়ায় বিবাদী আক্তার হোসেন নিহত ভিকটিম সিরাজুল ইসলামকে তার অটো রিক্সার গ্যারেজে নিয়ে যান। ঐ দিন রাত দেড়টা হতে আড়াউটার মধ্যে যে কোন সময় বন্দর থানাধীন হরিবাড়ী সাকিনস্থ বিবাদী আক্তার হোসেনের অটো রিক্সা গ্যারেজের গেইটের লোহার এ্যাংগেলের সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ভিকটিম আত্মহত্যা করেন। পরবর্তীতে পুলিশ ভিকটিমের মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্ত করার জন্য মর্গে পাঠায় এবং ময়না তদন্ত শেষে দাফন কাফনের জন্য ভিকটিমের মৃতদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন। ভিকটিমের পরিবারের ধারণা ভিকটিম বিবাদীদের অপমানজনক ও প্ররোচনামূলক কথাবার্তা সহ্য করতে না পেরে এবং বিবাদীদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আত্মহত্যা করেন। পরবর্তীতে নিহত ভিকটিমের মেয়ে শিল্পী (৩৫), ২১ অক্টোবর বন্দর থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে একটি আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৬, তারিখ-২১/১০/২০২৪ ইং, ধারা- ৩০৬ পেনাল কোড ১৮৬০।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।