নাসিক ২১ নং ওয়ার্ডস্থ বৌ-বাজার ইজারাকে কেন্দ্র করে ইজারাদার মোঃ রিয়াদ (২৮)’ ও তার বন্ধু রাজন (২৫)’কে কুপিয়ে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখমের ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা দায়েরের ৮ দিন গত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোঃ সাইফুল আলম পাটোয়ারী বলেন, আসামিদের ঘরে তালা লাগানো, আসামীরা পলাতক রয়েছে, গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে মামলার আসামীরা বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ, একই কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মাইনু, বৌ-বাজারের সাবেক ইজারাদার বিএনপিকর্মী আক্তার হোসেনগংদের সাথে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সভায় যোগদান করছে এবং প্রকাশ্যে এলাকায় চলাফেরা করছে। অথচ পুলিশ বলছে আসামীর পলাতক! মামলার বাদীসহ পরিবারের লোকজন আতংকে  দিন কাটাচ্ছে। মামলার আইও ৮ দিনেও ভিকটিম এর কোন খোঁজ খবর নেননি! থানা পুলিশের অনিহার কারণে আসামী গ্রেফতার করতে পুলিশ সুপার ও র‍্যাব এর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীর পরিবারসহ এলাকাবাসী।

এদিকে হাফেজীবাগ পঞ্চায়েত সভাপতি স্থানীয় জাপা নেতা আলহাজ্ব আবুল খায়ের, নাজমুল হাসান আরিফ, শেখ মাইনু, কতিথ সাংবাদিক শেখ আরিফ ও বৌ-বাজারের সাবেক ইজারাদার স্থানীয় বিএনপি নেতা মোঃ আক্তার হোসেনগং ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ শাহীন মিয়ার সাথে দেখা করে বৌ-বাজার ইজারা আনা সংক্রান্তে আলোচনা করেছে বলে সূত্রে জানাগেছে। এ বিষয়ে  কাউন্সিলর শাহীন মিয়া বলেন, তাঁরা এসেছিল, রিয়াদ সিটি কর্পোরেশন থেকে ইজারা নিয়ে টোল আদায় করছে, এখানে আমার কিছুই করার নাই।
আহত ইজারাদার রিয়াদ জানায়, শেখ মাইনু, সোহাগের ভাই রাকিব, সাবেক ইজারাদার আক্তার হোসেনগং হামলা করেছে। আসামীরা এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। মামলার আইও এখনও কোন খোঁজ খবর নেয়নি। আসামীদের অবস্থান জানিয়ে ফোন করে জানালেও পুলিশ আসামীদেরকে ধরেনা। আমিসহ আমার পরিবারবর্গ চরম নিরাপত্তা হীনতায় আাছি বলে রিয়াদ দ্রুত আসামীদেরকে গ্রেফতারে জেলা পুলিশ সুপার ও র‍্যাব এর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (৯ জুলাই) রাত ৯ টায় বন্দর বাস স্ট্যান্ডের নিলা জুয়েলার্সের সামনে ইজারাদার রিয়াদ ও তার বন্ধু রাজনের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় বন্দর থানাধীন নুরবাগ এলাকার আব্দুল আজিজের স্ত্রী আহত রিয়াদের মা রিনা বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত নামা ৮/১০ জনকে বিবাদী করে গত ১০ জুলাই সকালে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং- ৯(৭)২৩, তাং- ১০/০৭/২৩ ইং, ধারা- ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০
মামলা সূত্রে জানাগেছে, বাদীর ছেলে মোঃ রিয়াদ (২৮) না’গঞ্জ সিটি কর্পোরেশন থেকে বন্দর থানাধীন শাহীমসজিদ এলাকার বৌ বাজারের ইজারা নেয়। উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে বিবাদীদের সাথে বাদীনির ছেলের পূর্ব হতে বিরোধ চলে আসছে। ইং ০৯/০৭/২৩ রাত ৯ টায় বাদীর ছেলে ও তার বন্ধু রাজন (২৫) বন্দর বাস স্ট্যান্ড নিলা জুয়েলার্সের সামনে পৌঁছা মাত্র পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সহ সকল বিবাদীগণ বেআইনী জনতাবদ্ধে একত্রিত হয়ে বাদীর ছেলে ও তার বন্ধুর পথরোধ করে বাদীর ছেলেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বাদীর ছেলে বিবাদীদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে সকল বিবাদীগণ বাদীর ছেলে ও তার বন্ধুকে এলোপাথারী কিল ঘুশি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিালাফুলা জখম করে। এক পর্যায়ে ১নং বিবাদী সোহাগ (২৮) তার হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীর ছেলের মাথার ডান পাশে কোপ মেরে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ২ নং বিবাদী ইয়াসিন (১৯) তার হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে বাদীর ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার মাঝখানে কোপ মারে গুরুত্ব কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৩ নং বিবাদী উজ্জল (৩৮) তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে বাদীর ছেলের মাথার বাম পাশের পিছনের দিকে কোপ মেরে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৪ নং বিবাদী শফিকুল (২৭) তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে বাদীর ছেলের ডান পায়ের হাটুর নিচে কোপ মেরে গুরুত্বৰ কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৫ নং বিবাদী লিমন (২৭) তার হাতে থাকা ধারালো চাইনিজ কুড়াল দিয়া বাদীর ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ মারলে বাদীর ছেলে আত্মরক্ষা করার জন্য হাত উঠালে বাদীর ছেলের ডান হাতে লাগে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। বাদীর ছেলেকে বাঁচাতে তার বন্ধু এগিয়ে এলে ৬ নং বিবাদী হাবিব হাসান (২৮) তার হাতে থাকা ধারালো চাইনিজ কুড়াল দিয়ে বদীর ছেলের বন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার বাম পাশে কোপ মেরে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৭ নং বিবাদী হোসেন (৩৫) তার হাতে থাকা এসএস পাইপ দিয়ে বাদীর ছেলেকে ও তার বন্ধুকে এলোপাতারী পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জথম করে। বাদীর ছেলে মাটিতে পরপ গেলে ৭ নং বিবাদী বাদীর ছেলের হাতে থাকা ২টি আংটি যার ওজন অনুমান ১ ভরি ৪ আনা যার মূল্য অনুমান ১ লাখ ১০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। ৮ নং বিবাদী সবুজ (২৫) বাদীর ছেলের গলায় থাকা ২ টি রূপার চেইন, ২ টি রূপার বেসলাইট, যার মূল্য অনুমান ২০ হাজার টাকা ও বাদীর ছেলের সাথে থাকা নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। বাদীর ছেলে ও তার বন্ধুর ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে বিবাদীগণ বাদীর ছেলে ও তার বন্ধুকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে চলে যায়। উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় বাদীর ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর জন্য প্রথমে জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জ নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদীর ছেলের অবস্থা আশংকা জনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরবর্তীতে বাদীর ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করায় এবং বাদীর ছেলের বন্ধুকে প্রথমে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদীর ছেলের বন্ধুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জ রেফার্ড করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *