রাজশাহী নগরীর শিরোইল মোল্লামিল এলাকার প্রতিবন্ধি নারী সুকমন। ৪৬ বছর বয়সী দুই পা হারা এই নারী নিয়মিত ভিক্ষা করেন সাহেব বাজার এলাকায়। আজ প্রতিবন্ধি দিবসে সকাল বেলা কথা হয় এ প্রতিবেদকের সাথে। দিবসটি সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই তার। জানাচ্ছেন নুন আনতে পানতা ফুরোনো সংসারে অর্থের জোগান নিয়মিত রাখতেই এ পেশা ছাড়তে পারছেন না তিনি। সরকারি ভাতা পান কি না? এমন প্রশ্নে তিনি আক্ষেপ করে বলেন আট মাস পরে পেয়েছেন ভাতা। যে ভাতা যখন প্রয়োজন তখন তা মিলছেনা। অন্তত নিয়মিত ভাতা মিললে অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তি থেকে সরে আসবেন বলে মনে করেন এই প্রতিবন্ধি নারী। তার মতো পুরো সাহেব বাজারে দেখা মিলেছে নানা বয়সী অন্তত ২৫ জন প্রতিবন্ধির। আরডিএ মার্কেট ওভার ব্রিজের পাশে ১১ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন অর্পিতাকে নিয়ে কড়া রোদে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে তার মা শান্তি। বলছেন, শিশুটির বাবা তার কোন দায়িত্ব নেয়নি। সে কারনেই পথে নামতে হয়েছে তাদের। ভাতা কার্ড চালু রয়েছে, কিন্তু তা মিলছে অনিয়মিত। যে পরিমান ভাতা মিলছে তা বর্তমানে বাজারে চলার মতো পর্যাপ্ত নয় বলে জানাচ্ছেন তারা। শুধু নগরী থেকেই নয়। তানোর উপজেলা থেকে ৫০ বছর বয়সী অমল কুমার পেটের তাগিদে বেশ ক বছর হলো রাজশাহীতে এসেছেন। ভিক্ষাবৃত্তিতে কোনো? এমন প্রশ্নে তিনি জানান, সরকারি ভাবে যে ভাতা মেলে তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয়। দুই ছেলে মেয়ে সহ ৫ জন সদস্যের পরিবারের ভরন পোষন চালাতে এখন তিনি সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করে শাহ মখদুম থানার মোড়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। তার মতে শুধু প্রতিবন্ধি ভাতা দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব তাই এই পেশায় থাকতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে।

চিত্রটা এখন এমন যে প্রতিবন্ধিদের ভাতা নিয়মিত এবং অর্থের পরিমান না বাড়ালে এই জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তন সম্ভব নয়। এ ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের স্বাবলম্বী করতে নানা উদ্যোগ চলমান থাকলেও অধিকাংশই বাদ পড়ে যাচ্ছেন। ফলে চাইলেও এই প্রতিবন্ধিরা তাদের পেশা পরিবর্তন করতে পারছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *