রাজশাহী নগরীর হেতমখাঁ হরিজন পল্লী এলাকায় জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় গেট নির্মাণ করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ওই রাস্তায় গেট নির্মাণ করে মূলত পাঁচটি পরিবারকে অবরুদ্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গেট নির্মাণ করায় এলাকাবাসীর মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নগর কর্তৃপক্ষ ও বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত ওই গেট ভাঙার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

ভুক্তভোগী পাঁচ পরিবারের অন্তত ২৫ জন সদস্যের আশঙ্কা, যেকোনো সময় গেটটিতে তালা ঝুলিয়ে দিলে তারা পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে। তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর হেতেমখাঁ হরিজন পল্লী এলাকায় সিটি করপোরেশনের আরসিসি একটি রাস্তার মুখে লোহার বিশালাকার গেট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মোটরসাইকেল বা রিকশাও চলাচল করতে পারছে না। কোনোমতে হেঁটে যেতে হচ্ছে পকেট গেট দিয়ে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মামুন রেজা জানান, গত ২৪ মার্চ হরিজন পল্লী এলাকায় সিটি করপোরেশন থেকে নির্মিত রাস্তার দক্ষিণের মাথায় গেটটি নির্মাণ করেছেন ওই এলাকার প্রভাবশালী সাবের আলী, তাঁর ভাই আব্দুর রশিদ, ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের কর্মচারী সাগরসহ তাঁদের আত্মীয়-স্বজনরা। রাস্তাটি দিয়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন গেছে। সিটি করপোরেশন রাস্তাটি ইট দিয়ে পাকাও করেছে।

ভুক্তভোগী মামুন রেজা জানান, এই রাস্তাটি এর আগেও কয়েকবার গেট নির্মাণ করে বন্ধ করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী সদর সহকারী জজ আদালতে ১৯৯৬ সালে মামলা করা হয়। ওই মামলায় আদালত রায় দিয়েছেন রাস্তার ওপর কোনো গেট নির্মাণ করা যাবে না।

আরেক ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় অর্ধেক মাটি আমাদের ছাড়া আছে। তার পরও আমাদের এই রাস্তায় চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে গেটটি নির্মাণ করা হয়েছে।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার সাবের আলীকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর চাচাতো ভাই সাহিদ আলী বলেন, ‘এই রাস্তার জমি আমাদের। তাই আমাদের পরিবারগুলোকে সুরক্ষা দিতে আমরা সবাই মিলে গেট নির্মাণ করেছি।’

জানতে চাইলে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী বলেন, ‘যাঁরা করেছেন, সেটি অন্যায় করেছেন; কিন্তু আমাদের এখানে কিছু করার নেই। তবে কাউকে চলাচলে বাধা দেওয়া হলে পুলিশ অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’

রাস্তাটি সিটি করপোরেশনের জানিয়ে রাসিকের সচিব মশিহুর রহমান বলেন, ‘এ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’