রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী নূপুর মহিলা ছাত্রীনিবাসের সামনের সড়কে প্রায় ৪০জন মানুষের জটলা। সেখানে দেখা যায় এক যুবকের মাথায় পালি ঢালছে দুই যুবক। পাশে (Suzuki G6R) দূর্ঘটনা কবলিত ক্ষতিগ্রস্ত নতুন একটি মোটরসাইকেল। মূলত তাকে ঘিরেই স্থানীয় জনতার ভিড়।
সেখানে উপস্থিত একাধিক স্থানীয়রা জানায়, প্রচন্ড স্পিডে বাইক চালিয়ে তালাইমারীর দিকে যাচ্ছিল আহত এই যুবক। হটাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় মাঝে স্থানের গ্রিলের সাথে কয়েকবার ধাকা খায়। এতে তার মাথা, হাত ও পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুত্বর আহত হয়।
দেখা যায়, আহত যুবককে দুইজন যুবক ধরাধরি করে অটোতে তুলে রওনা দেয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। ওই সময় বাইকের মালিক যুবরাজ সরকার (২৬)। সে তার সঙ্গীদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলছে, আমার নতুন বাইক। কেনা আমার মাত্র ৩দিন হলো। এই বাইক এ্যাকসিডেন্ট করে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে রেজুয়ান। বাইক আমি নিব না। নতুন বাইক দিতে হবে। নইলে খবর আছে বলে দে। এসব কথা বলে তিনিও অন্য একটি বাইক ড্রাইভ করে শহরের দিকে চলে গেলেন। পড়ে থাকলো এ্যাকসিডেন্টে ক্ষতিগ্রস্থ দামি বাইকটি।
পরে তার সেখানে রাবির এক শিক্ষার্থী দূর্জয় জানায়, আহত ছেলেটির নাম রেজুয়ান (২৬), তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা সিরামিক বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। আর বাইকের মালিকের নাম যুবরাজ সরকার। তিনি নগরীর একটি রেষ্টুরেন্টের মালিক।
প্রত্যাক্ষদর্শী ও একাধীক স্থানীয়রা জানায়, তালামারী টু সাহেববাজারের আলোকিত রাস্তাটি রাত বাড়ার সাথে সাথে ভয়ংকর উঠছে। অল্প বয়সি তরুণ, কিশোর ও যুবকদের আনাগোনা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে অসংখ্য দ্রুতগতি সম্পন্ন বাইকের যাতায়াত।
উঠতি বয়সি ছেলেরা এতই দ্রুত গতিতে বাইক চালিয়ে যায় যে, সামনে পড়লে রক্ষা নাই। প্রায় ঘটছে দূর্ঘটনা। আহত হচ্ছে। মেডিকেলে যাচ্ছে। কিন্তু কমছে না বাইকারদের বাইকের গতি। শুধু এই সড়কই নয়। নগরীর প্রত্যকটি আলোকিত সড়কের একই আবস্থা। বাইকারদের বাইক ড্রাইভ করা দেখলে মনে হবে, সে কোন রেসলিং ময়দান দিয়ে যাচ্ছে। আবার কেই কেই হেলে দুলে কাত করে রাস্তায় শুইয়ে বাইক ড্রইভ করে। ভাবখানা দেখলে মনে হবে, সড়কটি তার বাড়ির উঠান।
স্থানীয় পরিবহন বহন ব্যবসায়ী মোঃ বুল বুল আহমেদ বলেন,
রাত যত বাড়ে বেপরোয়া বাইকারদের আনাগোনাও তত বাড়ে। এসব বাইকারদের অধিকাংশদেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। তাছাড়া পড়াশোনা গভীর রাতে কিসের এত দাপাদপি। আমার মতো রাস্তার পাশে যাদের বাড়ি, তাদের প্রত্যেকেরই ঘুমের সমস্যা হয়।
এ ব্যাপারে আরএমপি ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এবং পুলিশের পুলিশ কমিশনার এর হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে করছেন স্থানীয়রা