রাজশাহী মহানগরী যেসব কারণে দিনে দিনে অপরাধ প্রবণ এলাকায় পরিণত হচ্ছে।
রাজশাহীতে বেকারত্ব, মাদকের ব্যাপক প্রসার, কতিপয় রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়া,অভিভাবকের গা-ছাড়া ভাব এবং মাঠ পর্যায়ের পুলিশের দায়িত্বশীল ভূমিকার অভাবে রাজশাহীতে অপরাধপ্রবণতা বেড়েই চলেছে। চুরি ছিনতাই ও মাদক কেনাবেচা নিত্য নৈতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে এমন কোন মহল্লা নেই যেখানে এসব প্রবণতা নেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই এসব দুর্বৃত্তদের চেনেন। পুলিশে খবর দেন কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফলাফল শুন্য। বরং পুলিশের কাছ থেকেই সংবাদদাতার নাম চলে যায় অপরাধীদের কাছে। থানা পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্যস্ততার কারণে সাধারণ মানুষের ফোন ধরতে পারেন না আবার অনেকের অবহেলাও রয়েছে।থানায় মামলা করতে গেলে ভুক্তভোগীর কমপক্ষে ৫/৬ ঘন্টা লাগে। কারণ থানায় ওসিকে পাওয়া যায় খুব কম। কোন কারনে ওসি অসুস্থ কিংবা ছুটিতে থাকলে অধিকাংশ অপরাধের ঘটনা আমলে না নিয়ে ভুক্তভোগীকে দিনের পর দিন ঘোরানো হয়। সুবিধা পায় অপরাধী চক্র। চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা থানায় গেলে অধিকাংশ ওসি তা রেকর্ড না করে অভিযোগ আকারে লিখে নেন। যা পরবর্তীতে তদন্তের নামে ধামাচাপা পড়ে যায়। কোন কোন ওসি সিভিল টিম বানিয়েছেন।যাদের কাজ হলো ধরা এবং ছাড়া।
একশ্রেণীর উঠতি যুবক মোটরসাইকেলে বেপরোয়া চলাচল করে এবং সুযোগমতো ছিনতাই করে এদের ব্যাপারে পুলিশের বিশেষ কোনো তৎপরতা না থাকায় পথচারীদের নিরাপদ চলাচল হুমকির মুখে। রাতভর এসব অপরাধীদের তৎপরতা প্রকট আকার ধারণ করে। সুষ্ঠু তত্ত্বাবধান এর মাধ্যমে নগরের পুলিশি টহল আরও কার্যকর করলে পরিস্থিতি উন্নয়নে হতে বাধ্য। ঈদের সময় অপরাধীদের তৎপরতা আরও বেড়েছে। ১২ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে সপুরা এলাকায় একজন কলেজ শিক্ষিকার ৪০ হাজার টাকা ছিনতাই হয়।তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ফাঁড়ির ইনচার্জ ঘটনাস্থলে আসেন। স্থানীয় সোর্সঃ / ছিনতাইকারীর মাধ্যমে জানতে পারেন ছিনতাইকারী কারা। যথারীতি ছিনতাইকারীর পিতা-মাতাকে ডাকেন এমনকি ছিনতাইকারীর সাথেও মোবাইলে কথা বলেন।
পরবর্তীতে ছিনতাইকারীর পিতা-মাতা হাসিমুখে বিদায় হন। এসব দৃশ্য ভুক্তভোগীদের সামনেই ঘটেছে। পরবর্তীতে তিনি আর কোনো ব্যবস্থা নেননি। জানা গেছে, ইনচার্জ ও কনস্টেবল মইন এসব অপরাধীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে। সে কারণে ওই এলাকা ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে। অসংখ্য ঘটনার খুবই সামান্য তথ্য গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারেন তাই যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বেপরোয়া কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিয়েছেন।তিনি আর এম পি তে যোগদানের পর পেশাগত দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন।
এরপরও বছরের পর বছর ধরে রাজশাহীতে থাকা মাঠপর্যায়ের কোন কোন সাব ইন্সপেক্টর, এএসআই ও কনস্টেবলের অপতৎপরতা বন্ধ হয়নি। অনেকেই একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিক। মোটরসাইকেলধারী ছিনতাইকারীদের রুখতে থানা পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের কঠোর অবস্থান প্রয়োজন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ এসব উঠতি বয়সের বেপয়োরা মোটরসাইকেল আরোহীকে না ধরে বয়স্ক এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে চলাচলরত ব্যক্তিদের বেশি ধরেন