নারায়ণগঞ্জ  ফতুল্লা হতে ১ হাজার ৬ বোতল ফেনসিডিলসহ কুমিল্লা’র মাদক ব্যবসায়ী মোঃ নূর ইসলাম (২৮)’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১১।

রবিবার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টায় ফতুল্লা থানাধীন রামারবাগ এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় র‍্যাব-১১, আদমজীনগর নারায়ণগঞ্জের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল পিএসসি তানভীর মাহমুদ পাশা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, র‍্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র‍্যাব ফোর্সেস নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও সমাজকে মাদকমুক্ত করার জন্য র‍্যাব নিয়মিত মাকদবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে র‍্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। প্রায়সই দেখা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা, পাড়া, মহল্লা মাদক বিক্রয়ের ও মাদক সেবনের স্পট হিসেবে গড়ে উঠছে, যেখানে অবাধে মাদকের কেনাবেচা ও সেবন চলছে। এসকল ঘটনা বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হয়েছে। মাদকদ্রব্য নির্মূলে ও মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুব সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে র‍্যাব-১১ বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষ্যে র‍্যাব-১১ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে র‍্যাব-১১ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে এবং বিভিন্ন সময়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার সহ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ স্বরূপ র‍্যাব-১১, সিপিসি-১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১ টায় নিজস্ব গোয়েন্দা কার্যক্রম ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোঃ নূর ইসলাম (২৮) পিতা- নিল মিয়া @ লিল মিয়া @ লিলু মিয়া, মাতা- রাবেয়া খাতুন, গ্রাম-দাররা দিঘিরপাড় (মকবুল এর বাড়ী), থানা- মুরাদনগর, জেলা-কুমিল্লাকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন রামারবাগ এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং ১০০৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে।

র‍্যাব আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নূর ইসলাম জানায় যে, সে একটি সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালান চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য । এই চক্রের সকলেই বিভিন্ন সাধারণ পেশা তথা- গাড়ী চালক, হেলপার, মেকানিক, সিকিউরিটি গার্ড ইত্যাদি পেশার সাথে জড়িত এবং তারা সাধারণ পেশার আড়ালে এসকল মাদকদ্রব্যের পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় পরিচালনা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত নূর ইসলামও একটি গ্যারেজের সিকিউরিটি গার্ড পেশার আড়ালে মাদকদ্রব্য সংরক্ষণ ও ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। এই চক্রটি পারস্পারিক যোগসাজসে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল সহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যের বড় আকারের চালান দীর্ঘদিন যাবৎ ট্রাক, পিকআপ, কার্ভাড ভ্যান সহ অন্যান্য যানবাহন ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের পণ্যদ্রব্য পরিবহনের আড়ালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা এসকল মাদকদব্য নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা সহ পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহে সরবারহ করে থাকে। গ্রেফতারকৃত নূর ইসলাম আরো জানায় আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে উপলক্ষ্য করে তারা এই বিপুল পরিমান ফেনসিডিল এর চালান নারায়ণগঞ্জ সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় সরবরাহের জন্য নিয়ে আসে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা কার্যক্রম ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-১১, সিপিসি-১ এর আভিযানিক দল মাদক চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য নূর ইসলামকে গ্রেফতার পূর্বক তার দেখানো মতে ফতুল্লা থানাধীন রামারবাগ এলাকার একটি গ্যারেজের সামনের ময়লার ড্রেনেজের ভিতর থেকে অভিনব কায়দায় লুকানো ও বস্তাবন্দি অবস্থায় ৪ টি বস্তায় সর্বমোট ১০০৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে যার আনুমানিক মূল্য ৩০ লাখ টাকা।
র‍্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত নূর ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্তদের বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসংক্রান্তে জড়িত অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য র‍্যাব-১১ এর গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে নিয়মিত মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *