ঘুমন্ত স্ত্রী ও ৬ বছরের মেয়ের উপর এসিড নিক্ষেপ মামলায় খোকনকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ র‌্যাব-১১। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাত আড়াইটায় কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন রায়পুর পুরান বাতাকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত খোকন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার গোপালদী পৌরসভার গায়েনপাড়া এলাকার মৃত আনসর আলীর ছেলে।
জানা যায়, ১ম স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর মোর্শেদা (২২) ও তার কন্যা সন্তান মারিয়া (৬) সহ মোর্শেদার মায়ের বাড়িতে বসবাস করত। গত ৫ মাস পূর্বে মোর্শেদার সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার গোপালদী পৌরসভার গায়েনপাড়া এলাকার মৃত আনসর আলীর ছেলে খোকনের ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। খোকনের এটি তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে শিশু মারিয়াকে তার নানির বাড়িতে রেখে আসার জন্য চাপ দেয় মোর্শেদার স্বামী। এতে রাজি না হওয়ায় মোর্শেদার স্বামী তাকে প্রায়ই নির্যাতন করত। এরই জের ধরে বিয়ের ৩ মাস পর খোকন মোর্শেদাকে মারপিট করে তার মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার পর থেকে মোর্শেদা তার সন্তান মারিয়া সহ তার মায়ের বাড়িতে বসবাস করত। গত ২৩ জুন রাত ৮টায় মোর্শেদা তার সন্তান মারিয়া সহ নিজ শয়ণকক্ষে শুয়ে থাকাবস্থায় খোকন তার সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জন নিয়ে তার স্ত্রী ও শিশু মারিয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ভিকটিমদ্বয়ের মুখমন্ডল বিকৃত করার হীন উদ্দেশ্যে উক্ত তারিখ রাত অনুমান ২০.২০ ঘটিকার সময় ভিকটিমদ্বয়ের শয়ণকক্ষের খোলা জানালার নিকট উপস্থিত হয়। তখন তাদের উপস্থিতির শব্দে মোর্শেদা জানালার দিকে তাকিয়ে ঘরের বৈদ্যুতিক আলোতে খোকন সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে দেখে চিৎকার দেয়। এসময় খোকন তার হাতে থাকা সিরিঞ্জ দিয়ে জানালার পাশ হতে মোর্শেদার ডান পায়ের উরুতে ও কন্যা সন্তান মারিয়ার মুখে নৃশংসভাবে এসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দেয়। তখন তাদের আর্ত-চিৎকারে মোর্শেদার মা সহ আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে, মোর্শেদা জানায় যে, খোকন তার সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের সহায়তায় তাদেরকে এসিড নিক্ষেপ করেছে। উক্ত বিষয়ে অবগত হয়ে ভিকটিমদ্বয়ের পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় তাদেরকে জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে ভিকটিমদ্বয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। বর্তমানে তারা উক্ত হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা সাহেদা বেগম (৬৫) বাদী হয়ে গত ৪ জুলাই ২০২৩ তারিখে এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫(ক)/৫(খ)/৭ ধারায় আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *